স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জে সকল ওয়ার্ডে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা হবে। এলাকাবাসীর জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রথম কৃষকের বাজারের উদ্বোধন করেছেন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও নিরাপদ খাদ্য বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কৃষকের বাজারে সরাসরি কৃষক কর্তৃক নিরাপদ খাদ্য ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব। এতে ভোক্তাদের নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে, কৃষক পণ্যের সঠিক মূল্য পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে। প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বক্তাবলী ইউনিয়ন থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইকৃত ১০ জন নিরাপদ চাষী তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল এ বাজারে বিক্রি করবেন।
আজ ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ সকাল ৯.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডে কৃষকের বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী। ওয়ার্ড নং ১৫ এর কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় আয়োজনে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোঃ তাজুল ইসলাম, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো। আরো উপস্থিত ছিলেন মনিরুজ্জামান মনির, কাউন্সিলর, ওয়ার্ড নং ১৪; কামরুল হাসান মুন্না, কাউন্সিলর, ওয়ার্ড নং ১৮, শারমিন হাবীব বিন্নি, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, ওয়ার্ড নং ১৩,১৪,১৫, আফসানা আফরোজ বিভা, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, ওয়ার্ড ১৬,১৭,১৮; মাহমুদা হাসনাত, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের এর সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট জাহাঙ্গীর আলম, নারায়ণগঞ্জের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ আনোয়ারুল ইসলামসহ আরো অনেকে।
ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নগরবাসীর নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণে ও স্বাস্থ্য রক্ষায় আমরা নিরলস কাজ করছি। পাশাপাশি নগর এলাকায় হাঁটা ও খেলাধূলার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যেও বিভিন্ন উদ্যোগ করা হয়েছে। আমাদের ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে কৃষকের বাজার স্থাপিত হয়েছে। এ বাজারে প্রাপ্ত নিরাপদ সবজি নগরবাসীর স্বাস্থ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
গাউস পিয়ারী বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে কৃষকের বাজার কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। আমাদের প্রত্যাশা এ কার্যক্রমটি সফল ও টেকসই করার ক্ষেত্রে মাননীয় মেয়রের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন সহযোগিতা প্রদান করবে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও উপকৃত হবে।
মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, কৃষকের বাজারে নিরাপদ সবজি সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শুধুমাত্র নিরাপদ চাষীদের এ কার্যক্রমের আওতায় বাছাই করেছে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের অভাবে আমরা বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছি। পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা সম্ভব হবে।
পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, কৃষকের বাজার কার্যক্রমকে সফল করার অন্যতম চালিকাশক্তি কৃষকগণ। আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এ বাজারের মাধ্যমে ভোক্তাগণ নিরাপদ খাবার পাবেন, সেই সাথে কৃষকগণ তাদের পণ্যের সঠিক মূল্য পাবেন। কৃষকের বাজার বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের একটি ঐতিহ্য। সেটি নগর এলাকায় আমরা নতুন করে তৈরির চেষ্টা করছি।
অসিত বরণ বিশ্বাস বলেন, সিটি কর্পোরেশন শুধুমাত্র রাস্তা পরিষ্কার বা ফুটপাত তৈরি নয় বরং এলাকাবাসীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের জন্যও কাজ করে। এরই ধারাবাহিকতায় কৃষকের বাজার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ বাজারটি ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি, সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থায়ীভাবে কৃষকের বাজার তৈরির উদ্যোগ গৃহীত হবে।