স্টাফ রিপোর্টার: চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন আশিকাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা কাইয়ুম গাজি, পিতা মৃত সুলতান গাজী দোকানের কুঠিরে কন্যা সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। কাইয়ুম গাজী পেশায় একজন ইলেকট্রিশিয়ান ও ব্যবসায়ী। বাবুরহাট বাজারে দোকান ভাড়া নিয়া ব্যবসা পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। সেই সুবাদে আশিকাঠি (১ নং ওয়ার্ড) নামক গ্রামে আলম খা’র (৩৮) বাড়িতে স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তানদের নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতেন। কাইয়ুম গাজি দোকানে থাকার সুযোগে বাড়িওয়ালা আলম খা’র সাথে কাইয়ুম গাজীর স্ত্রী রহিমা বেগম (৩৩) পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়েন এমনটাই অভিযোগ কাইয়ুম গাজির। কাইয়ুম গাজি বলেন, আমার স্ত্রী রহিমা বেগম ও আলম খা’র পরকীয়ার বিষয়টি আমার বড় মেয়ে কাজল আক্তার দেখতে পেয়ে আমাকে জানায় । পরে এ বিষয়ে স্থানীয় ভাবে এবং সংশ্লিষ্ট থানায়ও সালিশ দরবার হয়। সেই সূত্র ধরে আলম খা’র কু-পরামর্শে আমার স্ত্রী রহিমা বেগম ও আলম খান একত্রিত হয়ে আমার বড় কন্যা সন্তানকে জীবনে মারার জন্য পরিকল্পনা করে।
তিনি আরো জানান, গত ১৫ মে ২০২৩ ইং তারিখে আমার ভাড়া বাসায় আমার স্ত্রী ও আলম খান পরকীয়া লিপ্ত হলে বিষয়টি আমি জানতে পেরে দোকান রেখে আমার বাসায় গিয়ে তাদেরকে হাতে নাতে আটক করি। পরে আলম খা’র কিছু ভারাটে লোকজন এসে আমাকে ও আমার মেয়েকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বাইরাইয়া নিলা ফোলা জখম করে আমার ভাড়া করা বাসায় তালা দিয়ে আমাদেরকে বাহির করে দেয়। এতেও তারা ক্ষ্যান্ত না হয়ে পরবর্তীতে আমার দোকানে গিয়ে দোকানের মালামাল বাইড়াইয়া ভাঙ্গিয়া প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা ক্ষতি করে এবং দোকানের ক্যাশ বক্সে থাকা আমার মূল্যবান কাগজপত্র জন্ম নিবন্ধন, ন্যাশনাল আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, ব্যাংকের চেক বই ও নগদ ৭০ হাজার টাকা নিয়া আমার দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় আমার দোকানের তালা খোলা হয়। পরবর্তীতে আমি ও আমার মেয়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পত্র নেই এবং চাঁদপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে একটি মামলা দায়ের করি।
কাইয়ুম গাজি বলেন, আলম খান আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দমকি দিয়ে আসছে যাতে আমি মামলা তুলে নেই। যদি মামলা না তুলি তাহলে আমাকে ও আমার মেয়েকে জানে মেরে ফেলবে। তাই আমি তাদের ভয়ে দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবত আমার মেয়েকে নিয়ে এই দোকানেই বসবাস করে আসছি। এমনকি তাদের ভয়ে আমার মেয়ে কাজল আক্তার স্কুলে যেতে পারছে না। তাদের ভয়ে আমি আমার ছোট দুই মেয়ে কুলসুমা আক্তার(৩) ও শামসুন্নাহার(২) এর সাথে দেখা করতে পারিনা।
কাইয়ুম গাজি প্রশ্ন করে বলেন, আমার ভাড়া করা বাসা থেকে আমাকে ও আমার মেয়েকে বের করে দিয়েছে কিন্তু আলম খান কোন স্বার্থে আমার স্ত্রীকে এখনো সেই বাসায় রাখছে?
উপরোক্ত ঘটনার বিষয়ে কাইয়ুম গাজির মেয়ে কাজল আক্তারের কাছে জানতে চাইলে সে তার মা রহিমা বেগম ও আলম খানের পরকীয়ার বিষয়টি স্বীকার করে।
এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বললে দুলাল ঢালী নামে এক ব্যক্তি জানান, কি নিয়ে তাদের সাথে দ্বন্দ্ব চলছে এটা আমি জানতাম না। আমি দেখেছি কাইয়ুমের স্ত্রী রহিমা বেগম আলমের হাতে একটি দড়ি দিয়ে কাইয়ুমকে বেঁধে রাখা জন্য বলছে।
কাইয়ুমের স্ত্রী রহিমা বেগমের সাথে আলম খা’র কেমন সম্পর্ক জানতে চাইলে দুলাল ঢালী বলেন, তাদের চলাফেরা দেখলে মনে হয় যেন একজনের সাথে আরেকজনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ ধরনের চলাফেরার জন্য আমি তাদেরকে কয়েকবার সতর্ক করেছি।
দুলাল ঢালী আরো জানান, কাইয়ুম এর দোকান যে তালা দিয়ে বন্ধ করেছে এবং তাকে বাঁধার জন্য যে দড়ি এনেছে তা আলামত হিসেবে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে।
উক্ত ঘটনায় কাইয়ুম গাজি স্থানীয় লোকজনের পরামর্শে চাঁদপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সি আর ৩৪৬/২০২৩ইং।
বর্তমানে কাইয়ুম গাজি তার কন্যা সন্তান কাজল আক্তারকে নিয়ে ভাড়া করা দোকানেই মানবতার জীবনযাপন করে আসছে। সে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে বলেন, আদালতের প্রতি আমার দীর্ঘ বিশ্বাস আছে আমি সঠিক বিচার পাব।
অভিযুক্ত রহিমা বেগমের সাথে দেখা করতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি এবং আলম খা’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।