স্টাফ রিপোর্টার: চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার তেতৈয়া গ্রামে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী নাজমা আক্তারের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় স্বামী আব্দুস ছালামকে আদালত মৃত্যুদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
সোমবার দুপুরে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এই রায় প্রদান করেন।মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আব্দুস ছালাম ৬নং কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের তেতৈয়া গ্রামের মৃত আয়েত আলীর ছেলে। তিনি পেশায় সিএনজি চালক। হত্যার শিকার নাজমা আক্তার একই ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের মো: আবু তাহেরের মেয়ে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১০ এপ্রিল পারিবারিকভাবে নাজমা ও সালামের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কনে পক্ষ সালামকে ১ লক্ষ টাকা মূল্যের জিনিপত্র দেয়। বছর খানেক তাদের দাম্পত্য জীবন ভালই চলছিল এবং তাদের কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর বিভিন্ন সময় সিএনজি ক্রয় করার জন্য নাজমার কাছে তার স্বামী ছালাম আরও যৌতুকের টাকা দাবী করে। ঘটনার দিন অর্থাৎ ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ২লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবী নিয়ে উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছালাম নাজমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৪দিন পর ১৪ অক্টোবর হাসপাতালে বার্ণ ইউনিটে নাজমার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় ১২ অক্টোবর নাজমার বড় ভাই মো: সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে নাজমার স্বামী ছালামকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ আব্দুস ছালামকে গ্রেফতার করে।
মামলাটি কচুয়া থানার তৎকালীন এসআই নুরল ইসলাম খানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি ১০১২ সালের ১৭ জানুয়ারী তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী (এপিপি) খোরশেদ আলম শাওন জানান, মামলাটি দীর্ঘ ১৩ বছর চলাকালীন সময়ে আদালত ৭জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন করেছে। স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করা হয়। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো: শাহজাহান মিয়া।