সোমবার ১০ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ৮:৩২

23.3 C
Bangladesh
সোমবার, নভেম্বর ১০, ২০২৫
spot_imgspot_img

সোমবার ১০ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২৫শে কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ১৮ই জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি ১৮ই জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি রাত ৮:৩২

৬৫ পণ্যে ভ্যাট বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক: আইএমএফের চাপে ওষুধ, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, মিষ্টিসহ ৬৫ পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, এনবিআর। শুধু তাই নয়, মোবাইলে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার, হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবারের খরচেও বাড়তি ভ্যাট বসানো হচ্ছে। নতুন ভ্যাট আরোপের বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন হয়েছে।

অচিরেই তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই বাড়তি ভ্যাট আরোপ জনগণের জন্য অনেকটা মূল্যস্ফীতির আগুনে ঘি ডালার মতো হবে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সরকারকে দেওয়া ঋণের শর্ত হিসেবে করছাড় কমিয়ে রাজস্ব বাড়ানোর অংশ হিসেবে ভ্যাটহার যৌক্তিক করার কথা বলেছে। সংস্থাটির পরামর্শ মতে মানুষের প্রতিদিন ব্যবহার্য ৬৫ পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।

এ তালিকায় উল্লেখযোগ্য পণ্যগুলো হলো— জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টমেটো কেচাপ/সস, সিগারেট, জুস, টিস্যু পেপার, ফলমূল, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, মিষ্টি, চপ্পল (স্যান্ডেল), বিমান টিকিট ইত্যাদি। ভ্যাট বাড়ানোর কারণে এসব পণ্য ও সেবার দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিয়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ঋণ দিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে কর-জিডিপি অনুপাত ০.২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত দিয়েছে, টাকার অঙ্কে যা ১২ হাজার কোটির বেশি। এই অর্থ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার (চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা) সঙ্গে যোগ হবে।

বাজেট প্রণয়নের সময় অর্থ মন্ত্রণালয় এনবিআরকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয়। এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবভিত্তিক নয় বলে এনবিআর থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। তার ওপর আইএমএফ আরো ১২ হাজার কোটি টাকা আদায়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় ভ্যাটহার বাড়ানোর বিকল্প ছিল না। সূত্র আরও জানায়, উপদেষ্টা পরিষদ নতুন ভ্যাটহারের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে।

আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত বাজেটের সময়ই ভ্যাটের হার বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর বাইরে খুব একটা পরিবর্তন হয় না। তা ছাড়া মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে এবার তো তা করার তেমন কারণও নেই। অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে এনবিআর ভ্যাটহার বাড়াতে চায়নি। এমনিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এনবিআর চাল, চিনি, ভোজ্য তেলসহ সাতটি পণ্য আমদানিতে শুল্কছাড় দিয়েছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় ঋণ পেতে কর-জিডিপি অনুপাত ০.২ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে এবং অতিরিক্ত সেই অর্থ আদায় করতে হবে বাজেট-পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে। তাই মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট বাড়ানো ছাড়া এনবিআরের আর কোনো উপায় ছিল না।

সদ্যো বিদায়ী বছরের ৪ ও ৫ ডিসেম্বর এনবিআরের শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর খাতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল। এতে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে আইএমএফ মিশনের প্রধান জয়েন্দু দে। বৈঠকে আইএমএফ কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে আনার জন্য চাপ দেয়। একই সঙ্গে বাজেট-পদক্ষেপের মাধ্যমে কর-জিডিপি অনুপাত আগের ০.৫০ শতাংশের অতিরিক্ত আরও ০.২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত জুড়ে দেয়।

জানা যায়, ক্ষমতার পালাবদলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে এক ধরনের মন্দাভাব থাকায় কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। এরই মধ্যে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতির মুখে সরকার। তাই রাজস্ব আয় বাড়াতে বিভিন্ন উপায় খুঁজছে এনবিআর। এরই অংশ হিসেবে ভ্যাট বাড়ানোর এ কৌশল বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

2,181FansLike
3,912FollowersFollow
22,700SubscribersSubscribe

-advertisement-

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ